ছবির এই লোকটির নাম রবীন্দ্রনাথ দাস। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা।
আজ থেকে বিগত ৭ দিন আগে রবীন্দ্রনাথ দাস সহ১৫ জন জেলে বাংলাদেশের কুতুব দিয়া থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দূরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়ার অদূরে বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে মাছ ধরছিলেন। হঠাৎ ঝড়ের কবলে পড়লে তাদের ফিশিং বোট উলটে যায়।
বোটের ১৫ জনের মধ্যে ১০ জন পানিতে ছিটকে পরে। বোটের ভেতরে থাকা পাঁচজনের ব্যাপারে রবীন্দ্রনাথ দাস এখনো কিছু জানেন না। ছিটকে পড়া ১০ জনের মধ্যে তারা তিনজন সব শেষ গতকাল সকাল পর্যন্ত একসঙ্গে ছিলেন।
তবে উদ্ধারের কিছু আগে সেই দুজনও সমুদ্রে তলিয়ে গেছেন বলে জানান তিনি। তারা বৃষ্টির পানি খেয়ে এই ৭ দিন কোন রকম জীবন ধারণ করেন। গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে বাংলাদেশের কুতুবদিয়ায় কেএসআরএম গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিং লিমিটেডের “এমভি জাওয়াদ” নামে একটি জাহাজ চলার পথে হঠাৎই ভেসে থাকা রবীন্দ্রনাথ দাস জাহাজের ক্যাপ্টেন এস এম নাসিরউদ্দিনের নজরে আসেন।
এরপর জাহাজ কাছে ভিড়িয়ে লাইফ জ্যাকেট ও বয়া ফেলে তাকে উদ্ধার করা হয়। এমভি জাওয়াদের কর্মকর্তা শাহজাদা আলম তার ফেসবুক আইডিতে পোষ্ট করে জানিয়েছেন, প্রথমবার পোর্ট সাইডে তাকে দেখার পর জাহাজ থেকে লাইফ জ্যাকেট এবং বয়া ফেলা হয়।
কিন্তু প্রবল স্রোতে রবীন্দ্রনাথ দাস বয়া ধরতে পারেননি। শুধু লাইফ জ্যাকেটটা ধরতে পেরেছিলেন। স্রোতের ধাক্কায় তিনি অনেক দূরে চলে যান। এরপর আবার পেছনের দিকে জাহাজ ঘুরিয়ে তিন নটিক্যাল মাইল দূরে তাকে পাওয়া যায়।
পরে সেই অবস্থায় বয়া ফেলে তাকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর রবীন্দ্রনাথ দাসকে মোটা জামা কাপর দিয়ে উষ্ণ করা হয়। তাকে সাথে সাথেই প্রয়োজনীয় খাবার, পানীয় এবং প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে, তিনি এখন সুস্থ রয়েছেন।
মানবিকতার অসাধারণ নিদর্শন স্থাপন করে রবীন্দ্রনাথ দাসকে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশের সেই জাহাজের ক্যাপ্টেন এস এম নাসিরউদ্দিন এবং উনার টিম মেম্বারদের প্রতি জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা।।